যানশাসক ও সাধারণ প্রশাসনের নির্বুদ্ধিতায় পণ্ড হতে বসেছে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কার্যক্রম

Akash Paramanik

যানশাসক (ট্রাফিক পুলিশ) ও রাজ্যের সাধারণ প্রশাসনের নির্বুদ্ধিতায় পণ্ড হতে বসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সাধের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কার্যক্রম।
এই মুহুর্তে রাজ্যের শিরদাঁড়াহীন নির্বোধ সাধারণ প্রশাসন কথায় কথায় জনসংযোগের আছিলায় যখন তখন যে কোন অনুষ্ঠানে নির্বিচারে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের পথে নামিয়ে একদিকে যেমন চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের কয়েকটা শিক্ষাদিবস ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করছে, ঠিক তেমন ভাবে রাজ্যের বুকে হয়ে চলা পথ দুর্ঘটনার উপরেও অঙ্কুশ লাগাতে পারছেনা।
অবশ্য একশো শতাংশ কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রশাসনের হাতে রাজ্য চালাবার ছাড়পত্র থাকলে এই ঘটনা ঘটা ছাড়া আর কী বা ঘটতে পারে !
এতটা পড়ে শাসক দলের সমর্থক অনেক পাঠকই হয়তো ভ্রু কুঁচকিয়ে ভাবছেন, রাজ্যে পথ দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাধারণ প্রশাসনের অযোগ্যতার বিষয়টা কোথায় নিহিত !
তাহলে কতগুলো প্রশ্নের উত্তর একটু মনে মনে খুঁজুন।
প্রথম প্রশ্ন, এই মুহুর্তে সারা রাজ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া কতজন ছাত্রছাত্রীর হাতে গাড়ী চালানোর লাইসেন্স আছে ?
দ্বিতীয় প্রশ্ন, এইসব শ্রেণীতে পাঠরত কতজন ছাত্রছাত্রীর নিজস্ব মোটর সাইকেল, বাস, লরি বা অন্য গাড়ী আছে ?
তৃতীয় প্রশ্ন, এই পর্যায়ের কতজন ছাত্রছাত্রীর হাতে এখনো পর্যন্ত কতজন সাধারণ নাগরিক পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন ?
চতুর্থ প্রশ্ন, বাড়ীর বাচ্চাদের কথা কি তাঁদের অতিবিজ্ঞ অভিভাবকবর্গ কোনোদিন শোনে ?
অবাক হলেও সত্যি এই পর্যায়ের কোনো ছাত্রছাত্রীরই না আছে গাড়ী চালানোর লাইসেন্স, না আছে নিজস্ব গাড়ী, বা তারা কেউই দুর্ঘটনা ঘটাবার কারিগর নন।
আর সব থেকে বড়ো কথা তাঁদের কথা কোনো অভিভাবকই শোনেন না।
তাহলে প্রশ্ন, যারা পথ দুর্ঘটনার সঙ্গে সাধারণত কোনোভাবেই জড়িত নন, কথায় কথায় পড়া নষ্ট করে তাদের এইভাবে পথে হাঁটিয়ে লাভটা কোথায় ?
এর পরেও শাসকদলের সমর্থকরা প্রশ্ন তুলতেই পারেন, তবে কাদের নিয়ে হাঁটা উচিত ?
পরিস্কার উত্তর যাঁর বা যাঁদের রোগ হয়েছে তাঁকে বা তাঁদের নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত, অন্য কাউকে নিয়ে গেলে কাজ হবেনা।
ঠিকই ধরেছেন, যানশাসক ও সাধারণ প্রশাসনের নিয়মিতভাবে এলাকা ধরে ধরে সেই এলাকায় লাইসেন্স প্রাপ্ত ও লাইসেন্স বিহীন গাড়ীর মালিকদের চিহ্নিত করে পদযাত্রা করানো উচিত।
এর সাথে সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানশাসকদের ভিখারীপনা (অবৈধভাবে গাড়ী পিছু টাকা আদায়) বন্ধ করতে হবে। যে বা যেসব যানচালক রাস্তায় দাঁড়িয়ে অবৈধভাবে টাকা আদায় করবে তৎক্ষনাত তাঁর বা তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
রাস্তার সমস্ত সিগন্যাল বাতি সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ও রাস্তা গাড়ী চলাচলের যোগ্য রাখতে হবে।
যতক্ষণ না যানশাসক ও সাধারণ প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত আধিকারিক ও কর্মীগণ এবং অবশ্যই সবজান্তা-র ছদ্মবেশে বিশুদ্ধ রকমের গণ্ডমূর্খ রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা এই বিষয়টা হৃদয়ঙ্গম করবেন ততক্ষণ পশ্চিমবঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা কোনোদিনই বন্ধ হবেনা।

Find Out More:

Related Articles: