‘‘ সরকার ঘরের চাবি চায়। কিন্তু বাড়ির মালিক বলছে, তাঁর কাছে চাবি নেই’’সোস্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষন

Paramanik Akash
সোস্যাল মিডিয়ায় দেশ বিরোধী বার্তা ছড়ানোর বিরুদ্ধে কেন্দ্র কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে । মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেনুগোপাল বলেছেন , ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সোস্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধি চূড়ান্ত করবে কেন্দ্র ।
সোশ্যাল মিডিয়ার যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আইনি লড়াই চালাচ্ছে কেন্দ্র। উল্টো দিকে নিয়ন্ত্রণহীন উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ধরে রাখাতে চেষ্টার কসুর নেই সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিরও। অবশেষে সেই লড়াইয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকেই এগোচ্ছে শীর্ষ আদালত। জানুয়ারিতেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শুনানির পর দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে চলা মামলাগুলি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে আসার কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
কেন্দ্রের দাবি, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে পোস্ট, শেয়ারে নিয়ন্ত্রণ না থাক, অন্তত কোনও বিদ্বেষ, দেশবিরোধী বার্তা, ভুয়ো খবর বা গুজব ছড়ালে তার উৎস সন্ধানের উপযুক্ত প্রযুক্তি থাকতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির। এ নিয়ে মাদ্রাজ, বম্বে, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে একাধিক মামলা চলছে। কিন্তু ফেসবুক-হোয়াটস্যাপ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কাছে কোনও পোস্ট-মেসেজ ডিক্রিপ্ট বা ডিকোড করার প্রযুক্তি বা ‘কি’ নেই। একাধিক হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলাগুলি সুপ্রিম কোর্টে একত্রিত করে শুনানির আর্জিও জানিয়েছিল মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা।
মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আগামী বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এ নিয়ে শুনানি হবে। যদিও এত দিন পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার দাবি মতো সব মামলা সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরের বিরোধিতা করে আসছিল তামিলনাড়ু সরকার।
এ দিনের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল এবং তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষের আইনজীবী দু’জনই বলেন, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের সেই প্রযুক্তি থাকা উচিত যাতে সরকার চাইলে যে কোনও বার্তা ডিক্রিপ্ট করতে পারে। অর্থাৎসেই বার্তার উৎস, যে প্রথম কোন অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল নম্বর থেকে পোস্ট বা হয়েছে, কারা কারা ফরওয়ার্ড করেছে— ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারে ওই সব সংস্থা। শুনানিতে বেঞ্চের এক বিচারপতির মন্তব্য,‘‘ সরকার ঘরের চাবি চায়। কিন্তু বাড়ির মালিক বলছে, তাঁর কাছে চাবি নেই।’’


Find Out More:

Related Articles: