বিশ্বব্যাঙ্কের হিসাবে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবথেকে দৈন্য অর্থনীতির মুখে পড়বে দক্ষিন এশিয়া
বিশ্বব্যাঙ্কএর আশঙ্কা অনুযায়ী করোনার জেরে খাদের অতলে তলিয়ে যেতে চলেছে দক্ষিন এশিয়ার অর্থনীতি। করোনা-মোকাবিলায় লকডাউনের কোপে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে সঙ্গীণ পথে এগিয়ে চলেছে।
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনা -সংক্রমণের হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেক কম হলেও চিকিৎসক ও অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, ভবিষ্যতে এই অঞ্চলই হয়ে উঠতে পারে করোনার ‘হটস্পট’। এর জেরে ধসে পড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ারবহু দেশের অর্থনীতি।
এ দিন বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত কয়েক দশক ধরে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে সুফল মিলছিল, লকডাউনের ফলে তা প্রবল ঝুঁকির মুখে। অনিশ্চয়তার মুখে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভবিষ্যৎ। লকডাউনের জেরে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বির্পযস্ত হওয়ার প্রভাব পড়েছে সমাজের সব স্তরেই। তবে অর্থনৈতিক ভাবে সমাজের নিম্নবর্গের মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আমদানি-রফতানি নেই, বেহাল পর্যটন শিল্প, বন্ধ কলকারখানা, মার খাচ্ছে ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা। যার জেরে হঠাৎই কাজ হারিয়েছেন দিনমজুর বা অস্থায়ী কর্মীরা। স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে সামাজিক বা অর্থনৈতিক সুরক্ষা—সবেতেই অনিশ্চিত তাঁদের ভবিষ্যৎ।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আদর্শ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়া। পর্যটন শিল্প অসাড় হয়ে পড়ে রয়েছে, সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত, বস্ত্র শিল্পে চাহিদা নেই, ক্রেতা বা বিনিয়োগকারীর কাজেও ধাক্কা লেগেছে।” বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ারকোনও দেশে মন্দা, কোনও দেশে বা মহামন্দাও দেখা দিতে পারে। চলতি আর্থিক বছরে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়াতে পারে ১.৮ শতাংশ থেকে ২.৮ শতাংশে। যদিও বিশ্বব্যাপী করোনা-সংক্রমণের আগে এ অঞ্চলে৬.৩ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি পূর্বাভাস করেছিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। ওই সংস্থার দাবি, এই আবহে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মলদ্বীপ। মূলত পর্যটন শিল্পের উপরে নির্ভরশীল মলদ্বীপের জিডিপি ১৩ শতাংশ নীচে নেমে যেতে পারে। অন্য দিকে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ৫.৯ শতাংশ ও ২.২ শতাংশ নিম্নমুখী হতে পারে। স্বস্তিতে দক্ষিণ এশীয় অর্থনীতির হেভিওয়েট দেশ ভারতও। এ দেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার ঘোরাফেরা করবে ১.৫ শতাংশ থেকে ২.৮ শতাংশের মধ্যে। করোনা-পরিস্থিতির আগে যা ছিল ৪.৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে।