আজ উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবস

A G Bengali
অসফলতার ধারাবাহিকতা চলছিল। এর মধ্যে সরোজ মুখোপাধ্যায়ের 'মর্যাদা' ছবিতে নায়ক হলেন। তবে পরিচালকের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাম পাল্টে হলেন অরূপ কুমার। তাতেও কাজ হল না। ‘সহযাত্রী’ ছবিতে অভিনয় করছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা পাহাড়ি সান্যালের সঙ্গে। শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডায় পাহাড়ি সান্যাল হঠাৎ বলে বসলেন-'তুমি অরুণ নও হে, তুমি যে উত্তম, উত্তম কুমার।' তার পরামর্শে নাম পাল্টে হয়ে গেলেন উত্তম কুমার। সেই থেকে উত্তম কুমার। তবে নাম পাল্টেই প্রথম ছবি হিট হয়েছিল এমনটা হয়নি। 'বসু পরিবার' ছবিতে নায়কের ভূমিকায় নয়, ছিলেন পার্শ্বচরিত্রে। ছবিটি বেশ ভাল চলল, অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রশংসিত হলেন উত্তম।তারপর বাকিটা ইতিহাস!

এরপর উত্তমকুমারের কেরিয়ারে এসেছে 'সাড়ে ৭৪'। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন সুচিত্রা। আর ফিরে তাকাতে হয়নি বাঙালির শ্রেষ্ঠ ম্যাটিনি আইডলকে। এক বছরে এসেছিল ১৪ টি ছবির সুযোগ। মায়া মুখোপাধ্যায় থেকে, কাবেরী গুপ্ত, ভারতী দেবী, সন্ধ্যারানী, সুচিত্রা, সাবিত্রী, সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে ততদিনে একের পর এক ব্লক বাস্টার ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। 'আই উইল গো টু দ্য টপ... দ্য টপ.. দ্য টপ' , বাঙালিক আবেগকে উস্কানোর জন্য় উত্তমের 'নায়ক ' ছবির এই সংলাপই যথেষ্ট ছিল। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত , উত্তম-শর্নিলা অভিনীত এই সংলাপ যেন আদ্যোপান্ত 'নায়ক' উত্তম কুমারকে বর্ণনা করে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত মোট ২১২টি ছবি করেছেন তিনি। তাঁর সবকটি ছবিই ভারতীয়, বিশেষ করে বাংলা সিনেমার অলঙ্কার। অভিনয় ছাড়াও পরবর্তীতে প্রযোজক, পরিচালক, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক হিসেবেও কাজ করেছেন উত্তম। ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ও ‘চিড়িয়াখানা’য় অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

তাঁর চোখ কখনও কথা বলে শিশুর সারল্যে, আবার রোম্যান্টিসিজমে ওই চোখের চাউনিই চরম মায়াবী হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। তিনি উত্তম কুমার। বাঙালির মহানায়ক। কলকাতার ছাপোষা বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তিত্ব বাংলা সিনেমায় লিখে গিয়েছেন এক রূপকথা। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ‘ওগো বধু সুন্দরী’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীনই তাঁর স্ট্রোক হয়। বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চিকিৎসকদের প্রাণপণ চেষ্টার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ চার দশক অত্ক্রান্ত, কিন্তু বাঙালি এখনও উত্তমে আচ্ছন্ন। এখনও টেলিভিশনে পর্দায় সুর বাঁধে ‘হারানো সুর’। ‘নায়ক’-এর অভিনয় দেখে সম্ভ্রম জাগে। বাঙালি ভুলতে পারেনি তাঁকে। এখনও বাঙালির কাছে সেরা অভিনেতা তিনিই। তাই তো তিনি উত্তম কুমার আর এটাই তো উত্তম ম্যাজিক ..!! কি তাই তো ?

Find Out More:

Related Articles: