রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ
প্রায় তিন ঘণ্টার সওয়াল-জবাব, তার পর আরও পাঁচ ঘণ্টার অপেক্ষা—অবশেষে আলিপুর জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত শেষ পর্যন্ত খারিজ করে দিলেন রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন। ফলে আদালতের এই রায়ে রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমার যে আরও বিপাকে পড়লেন তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই আইনজীবী মহলে।
শুক্রবারই এই আদালতে রাজীব কুমারের তরফে আগাম জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল। হাইকোর্ট রাজীব কুমারের গ্রেফতারি সংক্রান্ত রক্ষাকবচের মেয়াদ না বাড়ানোয় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার জামিনের আর্জি নিয়ে গিয়েছিলেন বারাসতের এমপি-এমএলএ বিশেষ আদালতে। সেখানে বলা হয়, এই মামলা শোনার এক্তিয়ার তাদের নেই। এর পরেই রাজীবের আইনজীবীরা যান বারাসত জেলা আদালতে। শুনানি শেষে বলা হয়, সারদা মামলা যেখানে চলছে, সেখানেই আবেদন জানাতে হবে। এর পরে আলিপুর জেলা আদালতে আর্জি জানান রাজীবের আইনজীবীরা। সেখানেই এদিন খারিজ হয়ে গেল রাজীবের আগাম জামিনের আর্জি।
এই আলিপুর আদালতেই এর আগে সিবিআই রাজীবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে বিচারক জানিয়েছিলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না থাকলেও রাজীবকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে তা কোনও বাধা নয়। এ দিন ১৫ পাতার রায়ে বিচারক সেনগুপ্ত তাঁর যে পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন, তার পরে রাজীবের আইনজীবীরা কোন পথে এগোবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করছেন তাঁরা। রায় নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি রাজীবের আইনজীবীরা। রায়ের কপি নিয়ে সিবিআই-এর ভারপ্রাপ্ত অফিসাররা রওনা হন সিজিও কমপ্লেক্সের দিকে। সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাঁরাও।
আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, দুই আদালতের কোনওটিতে গিয়েই রাজীবের কোনও লাভ হবে না। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই রাজীবের গ্রেফতারি সংক্রান্ত রক্ষাকবচ তুলে নিয়েছে। পাশাপাশি আদালত জানিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজনে রাজীবকে গ্রেফতারও করতে পারে সিবিআই। ফলে সেখানে গিয়ে খুব একটা যে সুরাহা মিলবে না তা স্পষ্ট। অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্ট এর আগে জানিয়ে দিয়েছিল যে এ বিষয়ে রাজীব কুমার হাইকোর্টের দারস্থ হতে পারেন। ফলে সুুপ্রিম কোর্টও যে রাজীবকে স্বস্তি দিতে পারবে এমনটা মনে করছেন না আইনজীবীদের ওই অংশ। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই দুই আদালতের দারস্থ হতে হলে সময় খুবই কম। কারণ সামনে পুজোর ছুটি।
এই সবকিছুর ফলে রাজীব কুমারের অস্বস্তি যে আরও বাড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।