পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ লালবাজার ; বেকসুর খালাস গোপাল সহ ১৩ জন

Paramanik Akash
২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল কলকাতার পুরসভার নির্বাচন । এই নির্বাচনের দিন উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় অশান্তি হয়। এমনকি পুলিশকে মারার চেষ্টা করা হয়। আর এই ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়ে যায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গোপাল তিওয়ারি ও তার দলবলের বিরুদ্ধে । কিন্ত কলকাতা গোপাল সহ তার সঙ্গীদের কারও বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট আদালতে দিতে পারল না কলকাতা পুলিশ । ফলে, উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বৃহস্পতিবার ছাড়া পেয়ে গেলেন ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গোপাল তিওয়ারি-সহ ১৩ জন।
২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল কলকাতায় পুরসভার নির্বাচন ছিল। ভোটের দিন গিরিশ পার্কের সিংহিবাগানে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তৎকালীন গিরিশ পার্ক থানার সাব ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় গোপালের। ওই দিনই মধ্য কলকাতার তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীর দলীয় অফিস থেকে দু’জন তৃণমূল-সমর্থক গ্রেফতার হন। পরে গোয়েন্দারা পাকড়াও করেন গোপাল-ঘনিষ্ঠ আরও চার জনকে। এর পর ধরা পড়েন গোপালও। উত্তর কলকাতার মানুষ গোপালকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসাবেই চেনেন। সাড়ে চার বছর আগের ওই ঘটনায় তাঁকে ধরতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি পুলিশের।
সম্প্রতি কলকাতা নগর দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়। বৃহস্পতিবার ছিল রায় ঘোষণা। রায়ে বিচারক এ দিন গোপাল-সহ ১৩ জন অভিযুক্তকেই প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দেন। তার পরেই আইনজীবী মহলে প্রশ্ন উঠছে, যাঁকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ, তাঁর বিরুদ্ধে কেন যথেষ্ট প্রমাণ জোগাড় করতে পারল না লালবাজার? পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, গোপাল কি আদৌ ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল না? না কি পুলিশের সঙ্গে কোনও ‘বোঝাপড়া’ হয়েছে?
২০১৭ সালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর সেই মামলার বিচারপর্ব শেষ হয়েছে। এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। গত এপ্রিলে জামিন চেয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গোপাল। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিচারপর্ব শেষ করতে নির্দেশ দেয় বলে আদালত সূত্রে খবর।
সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় এ দিন রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের জানান, ‘‘আমরা এই মামলায় যথেষ্ট খেটেছিলাম। বিচারক যদি মনে করেন, অভিযুক্ত দোষী নন, তা হলে তাঁর রায় আমাদের মেনে নেওয়া উচিত। এখনও রায়ের কপি হাতে পাইনি। সেটা খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে যা বলার বলব।’’


Find Out More:

Related Articles: