নেহেরুর ভুল শুধরে নিতে চান অমিত শাহ

Biswas Riya

জওহরলাল নেহরুর নামাঙ্কিত ‘নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ও লাইব্রেরি’তে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে এনে নেহেরুকেই রীতিমত তুলধুনা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।সেই সঙ্গে আরও যোগ করেন যে কাশ্মীরের ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে।

এ দিন সঙ্ঘের একটি সংগঠনের ডাকা অনুষ্ঠানে গিয়ে ৩৭০ অনুচ্ছেদ-সহ নানা প্রসঙ্গ টানেন অমিত। সেখানেই কাশ্মীর নিয়ে সব দায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর উপরে চাপিয়ে বলেন, বল্লভভাই পটেল ৬৩০টি ‘দেশীয় রাজ্য’কে ভারতের সঙ্গে সফল ভাবে যুক্ত করেছিলেন। আর নেহরুর দায়িত্বে থাকা কাশ্মীর এখনও সমস্যা হয়েই রয়ে গিয়েছে। কাশ্মীর-সমস্যা রাষ্ট্রপুঞ্জে নিয়ে যাওয়ার ‘ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’ও নেহরুর ‘হিমালয়-প্রমাণ ভুল’। অমিতের দাবি, ‘‘কাশ্মীরের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। কারণ, যিনি ভুল করেছেন, তাঁর হাতেই ইতিহাস লেখার দায়িত্ব ছিল। ফলে নিজের ভুল আড়াল করেই এই ইতিহাস লেখা হয়েছে। সময় এসেছে, সত্যি ইতিহাস লেখার।’’

কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা অমিত শাহের মন্ত্যব্যের সমালচনা করে বলেন  ‘‘কাশ্মীর-সহ ভারতের সমস্ত ইতিহাসই যথাযথ ভাবে নথিভুক্ত করা আছে। এর নতুন কোনও ব্যাখ্যার দরকার নেই। অমিত শাহেরা বরং কাশ্মীরের উন্নয়নে নজর দিন। জোর করে ইতিহাস বদলানোর দিকে নজর দেওয়ার দরকার নেই।’’  

কাশ্মীর প্রসঙ্গে শাহের ব্যাখ্যা, ১৯৩০ সাল থেকে শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে ‘মুসলিম কনফারেন্স’ মহারাজা হরি সিংহের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। পরে ‘মুসলিম কনফারেন্স’ তাদের নাম বদলে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’ করে। স্বাধীনতার সময় মহারাজা প্রথমে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব স্বীকার করেননি। ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর পাকিস্তানি হানাদারেরা জম্মু-কাশ্মীরের উপর হামলা করে। তারা শ্রীনগরের দিকে এগোতে থাকে। মহারাজা সেই আক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে ২৬ অক্টোবর গভর্নর জেনারেলকে চিঠি লিখে ভারতের সঙ্গে যোগ দিতে রাজি হন। পর দিনই তা মঞ্জুর হয়। সে দিন থেকেই গোটা জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অঙ্গ। 

নেহেরুকে আক্রমণ করে শাহ আরও বলেন  ‘‘২৭ অক্টোবরই কালবিলম্ব না করে সর্দার পটেল ভারতীয় সেনা পাঠিয়ে পাক সেনা ও অনুপ্রবেশকারীদের হটানোর কাজ শুরু করেন। সেনা সাফল্যও পাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হল। যার ফলে পাক সেনার কব্জায় থেকে গেল জম্মু-কাশ্মীরের একটি অংশ। কংগ্রেসকে আমার প্রশ্ন, আমাদের সেনা যখন সফল হচ্ছিল, তখন নেহরু হঠাৎ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন কেন? সেটি না করলে পুরো কাশ্মীর আমাদের থাকত। রাষ্ট্রপুঞ্জে যাওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়েও হিমালয়-প্রমাণ ভুল করেছেন নেহরু। সেখানেও ভুল ভাবে পেশ করার খেসারত এখনও দিতে হচ্ছে। পাকিস্তানের কব্জার কথা না-বলায় মালিকানা নিয়ে ঝগড়া এখনও চলছে।’’ 

আনন্দ উত্তরে বলেন ‘‘যা সিদ্ধান্ত সে সময় নেওয়া হয়েছিল, তা সমবেত ভাবেই নেওয়া হয়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে বিশ্বের কোনও দেশের কোনও সংশয় না থাকলেও দেশের বর্তমান শাসক দল নাগাড়ে প্রশ্ন তুলে চলেছে।’’ 

 


Find Out More:

Related Articles: