নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সংসদীয় প্রতিনিধি দলকে দিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে নিজের পক্ষে সওয়াল করিয়ে নেবেন । কিন্ত তাতে বেআব্রূ হয়ে যাবেন সেটা হয়তো কল্পনা করতে পারেন মোদী –অমিত শাহরা । না হলে সরকারি পয়সায় ঘুরে ফিরে খেয়ে দেয়ে যাবার সময় আর এক অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলে দিলেন । ভাবা যায় !
এদিকে গতকাল থেকেই কয়েকটি গণমাধ্যম ও কংগ্রেস দল এই ইস্যুতে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিল । তাদের অভিযোগে দেশের বিরোধী নেতারা তো কাশ্মীর যেতে চেয়েছিল তাদেরকে যেতে দেওয়া হয়নি কেন ? কেন আমেরিকার সেনেটার যেতে দেওয়া হল না । দেশের সংবাদ-মাধ্যমে আলোচিত এই সব প্রশ্ন হয়তো আগত সাংসদদের নজরে পড়েছে বলেই মনে হয় । তাই সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন সময়ে মোদী সরকারের সেই অস্বস্তি বাড়িয়ে ইইউ এমপি নিকোলাস ফেস্ট। বিরোধী দলের নেতা সাংসদদের কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে তিনি বলেন, ‘‘যদি আপনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এমপিদের ঢুকতে দেন তা হলে ভারতের বিরোধী দলগুলিকেও সেই ছাড়পত্র দেওয়া উচিত। সুতরাং, কিছুটা হলেও অসামঞ্জস্য রয়েছে। বিষয়টি দেখা উচিত সরকারের।’’
২৭ জন এসেছিলেন কাশ্মীর পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাবেন বলে । কিন্ত চার জন হঠাৎ কাশ্মীর সফর না করে ভারত থেকে দেশে ফিরে যান । কেন দেশে ফিরে গেলেন ? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন । চারজন সাংসদের মধ্যে একজন ক্রিস ডেভিস । তিনি রীতিমত মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন । তাঁর অভিযোগ ,সরকারি ঘেরাটোপে নয়, নিজের মতো করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁকে কাশ্মীরে যেতে দেওয়া হয়নি। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘মোদী সরকারের জনসংযোগ স্টান্টের অংশ হতে আমি আসিনি এবং এমন ভান করতে পারব না যে, সব ঠিকঠাক চলছে। এটা স্পষ্ট যে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ভঙ্গ হয়েছে কাশ্মীরে। সারা বিশ্বের বিষয়টিতে নজর দেওয়া দরকার।’’
আবার এমন অভিযোগও উঠেছে যে বিদ্বৎসমাজ, বণিক মহল এবং কাশ্মীরের একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি দল ইউ ইইউ এমপিদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। ন্যাশনাল কনফারেন্স দুই সাংসদ অভিযোগ করেছেন, তাঁরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ওই এমপিদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আটকে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশিদের খাতির-যত্ন করে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সাংসদদের আটকে দেওয়ার প্রশ্নে তুলে সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। এ বার ইইউ প্রতিনিধিরাও তাতে সায় দেওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্র অনেকটাই চাপে পড়ল বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।