দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর প্রত্যাশা মত সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ হল । বাবরি মসজিদ মামলা প্রায় ১৩৪ বছর ধরে চলছে । আজ ৯ নভেম্বর ২০১৯ সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ এক ঐতিহাসিক রায় প্রদান করল । ৫ সদস্যের বিচারপতিরা বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিতে গিয়ে প্রথমেই শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের দাবি খারিজ করে দেন । কারণ এই জমির সঙ্গে শিয়াদের সর্ম্পক নেই । এরপরেই নির্মোহী আখড়ার দাবিও খারিজ করে দেওয়া হয় । এরপর মূল জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে রামলালা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে । মামলার রায় দিতে গিয়ে এদিন বিচারপতিরা স্বীকার করে নেন ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙাটা বেআইনি ছিল ।
এরপরেই মামলার রায় দিতে গিয়ে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেন , মসজিদ কোনো ফাঁকা জমিতে তৈরি হয়নি । এর নিচে ইমারতে সন্ধান পাওয়া গেছে । তবে সেটা কোনো ইসলামিক স্থাপত্য ছিল না । সেই ইমারত মন্দির তা বলা যাবে না । সুতরাং মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ হয়েছে তার কোনো প্রমাণ নেই । প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেন, যদি সেই সময়ের কাঠামোটা হিন্দুদের কাঠামো হয়েও থাকে তাহলে ওই জমিকে হিন্দুদের এখন বলা যাবে না । বা হিন্দুদের জমি বলে ধরে নেওয়া যাবে না । তবে ওই স্থানকে হিন্দুরা রামের জন্মস্থান বলে বিশ্বাস করে তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই ।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন , ১৮৫৭ সালের আগে ওই জমিতে রামের পুজো হত । সেখানে হিন্দু পুর্ণ্যার্থীরা যেতেন। তারা তাদের ধর্মীয় আচরণ পালন করত বলে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে । বরং এটা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড প্রমাণ করতে পারেনি যে ওই সময় থেকে বাবরি মসজিদ চত্বর সহ পুরো এলাকাটি তাদের দখলে ছিল ।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে ওখানকার সম্পত্তি তিনভাগে ভাগ করে তা সঠিক নয় । ওই মামলা কোনো জমি ভাগাভাগির মামলা ছিল না । সুপ্রিম কোর্ট এদিন বলে , ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙাটা বেআইনি ছিল । তবে বির্তকিত পুরো ২.৭৭ একর জমি রাম মন্দির করার জন্য দেওয়া হল । এরজন্য আগামী তিনমাসের মধ্যে আলাদা ট্রাস্ট গঠন করে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে ।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট স্বীকার করে , বাবরি মসজিদ ভাঙাটা বেআইনি ছিল তবে বির্তকিত জমিতে রামলালার অধিকার স্বীকার করে নেওয়াটা আইন-শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বহাল রাখার প্রশ্নের সঙ্গে সম্পৃক্ত ।