কতটা মসৃণ মিমির পথ?

frame কতটা মসৃণ মিমির পথ?

Biswas Riya

রুপোলী পর্দার দুই অভিনেত্রী মিমি ও নুসরত একইসাথে সাংসদ হয়েছিলেন। তারপর থেকে মসৃণভাবে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস, এবার শুরু হয়েছে রাজনীতির মঞ্চে দুই নায়িকার পারফরম্যান্সের বিচার।

সাংসদ হওয়ার পর থেকে মিমি চক্রবর্তী কি অনেকটাই ম্রিয়মাণ? সে রকমই তো শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। নির্বাচনে জেতার পর নুসরতের বিয়েতে কন্যাপক্ষের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গিয়েছিল মিমিকে। কিন্তু তার পর থেকে তিনি যেন অন্তরালে। হাতে এই মুহূর্তে ছবি নেই। অনেকেই বলছেন, রাজনীতির ময়দানে তাঁকে খুঁজতে হচ্ছে আতস কাচ দিয়ে। পুজোর কার্নিভাল, ‘দিদি’র বাড়ির কালীপুজো থেকে শুরু করে নানা দলীয় অনুষ্ঠান... কোথায় মিমি চক্রবর্তী? এমনকি ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে অরূপ বিশ্বাস মহা আড়ম্বরে বোনদের কাছ থেকে ফোঁটা নেন। সেখানেও নায়িকার একঝলক দেখা মিলেছিল মাত্র! সম্প্রতি সাংসদ-বিধায়কদের নিয়ে তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি মিটিং করেন, সেখানেও ছিলেন না মিমি।   

 

আসলে এ ধরনের গেট টুগেদার রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চও বটে। এখানে উপস্থিতি-অনুপস্থিতি অনেক জটিল বার্তা দেয়। কে দলীয় নেতৃত্বের কাছাকাছি এল বা কার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ল... এমন কত হিসেব তো এখান থেকেই পরিষ্কার হয়। মিমির অনুপস্থিতি নিয়ে কথা উঠছে বিভিন্ন মহলে। কেউ সোজাসুজি কিছু না বললেও, কথার মারপ্যাঁচে অনেকেই দিব্যি বুঝিয়ে দিচ্ছেন, সাংসদ হয়ে রাতারাতি বদলে গিয়েছেন নায়িকা। এখানেই উঠে আসছে আর এক সাংসদ এবং অভিনেত্রী নুসরতের সঙ্গে তাঁর তুলনা। অবশ্য এর পিছনে কারণও রয়েছে। একদিকে রাজনীতি-সহ বিভিন্ন মঞ্চে নুসরতের উজ্জ্বল উপস্থিতি। নিজের কেন্দ্র বসিরহাটেও তিনি নিয়মিত। যতটা পরিণত ভাবে ও ভঙ্গিতে তিনি রাজনৈতিক প্রচারসভা করছেন, তার তারিফ দলের অন্দরে-বাইরে অনেকেই করছেন। নুসরত ‘অসুর’-এর শুটিংও সেরে ফেলেছেন। এমনকি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নুসরত যে ভাবে নজর কেড়েছেন, মিমিও কি ততটাই?

 

সিনেমায় অভিনয় না করলেও মিমি নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন। মিউজ়িক ভিডিয়ো করেছেন। সেগুলি প্রশংসাও পেয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে উঠে আসা প্রশ্ন নিয়ে কী বলছেন মিমি? ‘‘কার্নিভালে আমি কোনও দিনই যাই না। দিদির বাড়ির কালীপুজোয় অসুস্থতার কারণে যেতে পারিনি। সাংসদদের মিটিংয়ের দিনও অসুস্থ ছিলাম। আমি নিজে দিদিকে মেসেজ করে জানিয়েছি, যেতে পারব না। সে খবরটা বোধহয় অনেকে পাননি। আর যাদবপুরের লোকজনকে জিজ্ঞেস করুন, আমি কী কাজ করেছি। প্রত্যেক দিন অফিসে যাই। যে যা সমস্যা নিয়ে আসে, তা শুনি। সমাধানের চেষ্টা করি। নিয়মিত এলাকা পরিদর্শন করি। নানা জায়গায় বিজয়া সম্মিলনী করেছি। বুলবুলের পরের দিনই, আমার যে এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম,’’ স্পষ্ট উত্তর মিমির।  

 

তবে ‘সাংসদ হয়ে তিনি বদলে গিয়েছেন’, এ ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে শুনে, বেশ জোর গলায় বললেন, ‘‘আমি কাউকে পাত্তা দিচ্ছি না, এই কথাটায় ভীষণ আঘাত পেয়েছি। ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনও সিনেমার কাজ রাখিনি, যাতে এই দিকে সময় দিতে পাই। আমি ঠিক মতো কাজ করার চেষ্টা করছি বলেই কি এই কথাগুলো উঠছে? মানুষের জন্য কাজ করব বলে রাজনীতিতে এসেছি। আমার আলাদা করে কিছু পাওয়ার নেই। তা সত্ত্বেও এই সব নেতিবাচক কথা শুনতে হচ্ছে— এগুলো খুব খারাপ লাগে। অরূপদার (বিশ্বাস) সঙ্গে আমার নিয়মিত ফোনে কথা হয়। উনি আমার অভিভাবকের মতো।’’ 

 

মিমির সাংসদ হওয়া এবং রাজনীতির ময়দানে তাঁকে তৈরি করার পিছনে অরূপ বিশ্বাসের অনেকটা ভূমিকা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অরূপের বক্তব্য, ‘‘মিমি খুব ভাল কাজ করছে। ভীষণ সিরিয়াস। সব সময়ে আমার পরামর্শ নিয়ে কাজ করে। কোথাও ভুল হলে আমি ওকে বকুনি দিই। কারণ মিমি আমার ছোট বোনের মতো।’’

 

 


Find Out More:

Related Articles: