সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি ইস্যুতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের জেরে অবস্থান বদলাচ্ছেন কি অমিত শাহ ? পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কী করলেন অমিত শাহ
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি ইস্যুতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের জেরে অবস্থান বদলাচ্ছে কি অমিত শাহ ? অমিত শাহ টুইটার হ্যান্ডল থেকে হঠাৎ করে মুছে ফেলা হল বির্তকিত এনআরসি ইস্যু নিয়ে মন্তব্য । কেন এই টুইট সরিয়ে নেওয়া হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও এর কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
অমিত শাহের সেই টুইটটি মাস আটেক আগের। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার অভিযান তখন তুঙ্গে। গত ১১ এপ্রিল দার্জিলিঙে সভা করতে এসেছিলেন অমিত শাহ। সেখানে দেশ জুড়ে এনআরসি করার কথা সজোরে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, বৌদ্ধ, হিন্দু এবং শিখ শরণার্থী ছাড়া সমস্ত অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বিদায় করা হবে।
এর পর বিজেপির টুইটার হ্যান্ডলে অমিত শাহের সেই মন্তব্য ফলাও করে পোস্ট করা হয়। “আমরা সারা দেশে এনআরসি রূপায়ণ করবই। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ ছাড়া প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারীকে আমরা তাড়াব”— অমিতের এই উক্তির পাশে #নমোফরনিউইন্ডিয়া লিখে অনলাইন প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। সম্প্রতি বিজেপির টুইটার হ্যান্ডল থেকে অমিতের ওই টুইটটি উধাও হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি চোখে পড়তেই নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে, লাগাতার বিক্ষোভের জেরে বেকায়দায় পড়েই কি টুইট মুছে দিল বিজেপি?
তবে এখন টুইট মুছে দিয়ে কোনও লাভ নেই বলে ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘বিজেপির আইটি সেল টুইট মুছে দিতেই পারে। কিন্তু সংসদে দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সব রাজ্যে এনআরসি হবেই। তা মুছতে পারবে না ওরা।’’
সদ্য সমাপ্ত সংসদ অধিবেশনেই এনআরসি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অমিত শাহ। সেখানে বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কোনও সংশয় রাখবেন না, গোটা দেশেই এনআরসি হবে।’’ তাঁর ওই মন্তব্যের রেশ ধরে সেই সময় বিজেপি সাংসদেরাও দেশব্যাপী এনআরসি তৈরির দাবিতে সরব হন। কিন্তু তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার সাফাইও দিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে। এ দিন সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞাপনে কেন্দ্র জানায়, ‘‘দেশ জুড়ে কোনও এনআরসি ঘোষণা হয়নি। যদি কখনও দেশ জুড়ে এনআরসি-র ঘোষণা হয়, তা হলে সেই পরিস্থিতিতে নিয়ম ও নির্দেশিকা এমন ভাবে তৈরি করা হবে যাতে কোনও ভারতীয় নাগরিক অসুবিধায় না পড়েন।’’
আসলে বিজেপির ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ সম্পর্কে ভুল ধারনা ছিল । তারা বুঝতে পারেনি ৭২ বছর ধরে দেশে যে ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের বীজ বপন করা হয়েছে তা খুব সহজে উপড়ে ফেলা যাবে না । ৩৭০ ধারা রদ , পরে রামমন্দির রায় নিজেদের পক্ষে এনে বুঝতে পারেনি দেশের মানুষ ক্ষিপ্ত হচ্ছে । দেওয়াল লিখন পড়তে না পারার মাসুল গুণতে হচ্ছে মোদী-শাহদের । সিএএ আইন প্রত্যাহার না করলে ভারত জুড়ে যে আন্দোলন থামবে না , এই ইঙ্গিত যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে ততই মঙ্গল হবে ।