আমি জামিয়া মিলিয়া, আইআইটি কানপুর আর অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের পাশেই আছি ; মানুষকে খেতে-পরতে দিন।চাকরি দিন। সেটা দিতে আপনারা (বিজেপি) ব্যর্থ। এখন অনুপ্রবেশকারী খুঁজতে বেড়িয়েছেন।” সিএএ ইস্যুতে বিজেপিকে কটাক্ষ মমতার

Akash Paramanik

আগুন নিয়ে খেলবেন না। বৃহস্পতিবার মধ্য কলকাতার সিএএ-বিরোধী  এক জনসভা থেকে বিজেপিকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট করেছেন, যতক্ষণ না দেশ থেকে সিএএ  বিলোপ করা হবে, ততক্ষন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিজেপি আগুন নিয়ে খেলছে। ওরা কথা দিয়ে কথা রাখে না।এ প্রসঙ্গে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে তিনি অভিযোগ করেছেন, ম্যাঙ্গালুরুতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে মৃত দু’জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছিলো সে রাজ্যের সরকার।কিন্তু কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন।
বুধবারই সাংবাদিকদের বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, যদি তদন্তে প্রমাণিত হয়, মৃত দু’জন ডিসেম্বর ১৯ তারিখের সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের জেরে ছড়িয়ে পড়া হিংসার অংশ, তাহলে সরকার ওদের পরিবারকে এক টাকাও দেবে না।এদিকে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে দেশব্যাপী চলা ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে এসে মমতা বন্দোপাধ্যায় জানান, ‘তোমরা ভয় পেও না। আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।  বিজেপিকে আমি সতর্ক করলাম, আগুন নিয়ে খেলবেন না।’ তিনি অভিযোগ করেছেন, যে পড়ুয়ারা সিএএ আর এনআরসি’র বিরোধিতা করছে, বিজেপি তাঁদের হুমকি দিচ্ছে। ছাত্রাবাস -এর ঘর খালি করে দিতে বলা হচ্ছে। ‘আমি জামিয়া মিলিয়া, আইআইটি কানপুর আর অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের পাশেই আছি’, বলেন তিনি।তাঁর প্রশ্ন, ‘ছাত্ররা প্রাপ্তবয়স্ক, ভোটার। ওরা আন্দোলন করলে ক্ষতি কোথায়?’ সকলকে একত্রিত করতে সোশাল মিডিয়ার ব্যবহারের ওপর জোর দিতে বলেছেন তিনি।


এদিন মল্লিক বাজারের ওই সভা থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন কটাক্ষ করে বলেছেন; অন্য পার্টির দাগীদের ওরা দলে নেয়, তারপর ধুয়ে-মুছে সাদা করে সামনে আনে। বিজেপিতে গেলেই সব দাগ মুছে যায়, কটাক্ষ তাঁর। আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিনি প্রশ্ন করেন, “আপনি প্রত্যেকের পিছনে ছুটলে, আপনি থাকবেন কী করে?’  নিজেদের জীবন দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এই আন্দোলন চালিয়ে যাবে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, আমাদের লড়াই সব সম্প্রদায়ের জন্য। এটা হিন্দুস্থান।
আমরা কোনও দলকে আমাদের অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। জনগণকে সতর্ক থাকার আবেদন করে তিনি বলেছেন, বিজেপি  বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আন্দোলনকে দমাতে চেষ্টা করছে। সতর্ক থাকুন সেই ফাঁদে পা দেবেন না। বিশেষ করে মা-বোনেদের কাছে তাঁর বার্তা, “আপনারা সতর্ক থেকে এই অপচেষ্টা রুখুন।” তিনি যোগ করেছেন,  তৃণমূল কংগ্রেস বিভেদ নয় ভালোবাসার রাজনীতি করে। তাঁর দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণাটকে আন্দোলনের জেরে মৃত পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেবে। খুব শীঘ্র ওই রাজ্যে তাঁর দলের প্রতিনিধিরা যাবেন বলে, জানিয়েছেন তিনি।
এমনকী, কোনও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও, চারজন সেখানে যেতে পারে। এই দাবি করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলকে লখনৌ যেতে দেওয়া হয়নি।’ মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “মানুষকে খেতে-পরতে দিন।চাকরি দিন। সেটা দিতে আপনারা (বিজেপি) ব্যর্থ। এখন অনুপ্রবেশকারী খুঁজতে বেড়িয়েছেন।”

Find Out More:

Related Articles: