স্বচ্ছ ভাবমূর্তি মানুষের পাশে থাকা এবং জনসংযোগ থাকলে তবেই জুটবে দলীয় টিকিট নির্দেশ তৃণমূল নেতৃত্বে্র
নতুন বছরের প্রথম দিকেই কলকাতা পুরসভা সহ রাজ্যের একাধিক পুরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ এই পৌরসভা নির্বাচন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পুরসভা গুলির নির্বাচনকেই সেমিফাইনাল হিসেবে মনে করছে তৃণমূল শিবির। সেইমতো এখন থেকেই কৌশল সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। দলের স্ট্র্যাটেজি মেকার প্রশান্ত কিশোর – এর মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে দলকে সঙ্ঘবদ্ধ এবং নির্বাচনমুখী করে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়ে গিয়েছে। একদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসির বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, দলের অন্যান্য সাংসদ বিধায়ক সহ জনপ্রতিনিধিদেরও রাস্তায় নামিয়েছেন। আবার পুরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের সকল নেতৃত্বকে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে যেভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়েছিল তা সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। স্থানীয় নেতৃত্বের দাপাদাপি সাধারণ মানুষ খুব একটা ভালোভাবে নেননি। গত লোকসভা নির্বাচনে দলের বড়সড় ব্যর্থতার পিছনে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় নেতৃত্বের দাপাদাপি অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। তাই দলীয় নেতৃত্ব কে সতর্ক করা হয়েছে।
শুক্রবার প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতিতে তৃণমূলের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ তথা যুব তৃনমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে এখনই নির্বাচন মনে করে ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গায়ের জোরে ভোট করা যাবে না। কারো জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে মেনে নেওয়া যাবে না। ভোটের দিন লোকাল ক্ষমতাবলে ভোট করা যাবে না। এমনই কড়া সিদ্ধান্ত দলের নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতারা।
কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক শেষ হলো।
এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক শুরু হচ্ছে, এখানে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর , ববি হাকিম, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী প্রমু্খ। বৈঠকে সূত্র থেকে জানা গেছে, কাউন্সিলরদের দুটি করে দিদিকে বলো কর্মসূচি দেওয়া ছিল তাদের আরও দুটি করে দিদিকে বলো কর্মসূচি করতে হবে এবং বিধায়কদের চলতি মাসের মধ্যেই দশটি করে কর্মসূচি শেষ করার নির্দেশ দিলেন দলীয় নেতৃত্ব।বৈঠকের দিদিকে বলো কর্মসূচির পাশাপাশি দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে এবং এলাকার সংশ্লিষ্ট মানুষ বিশিষ্টজনদের কাছে বারেবারে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের কি কি সমস্যা আছে এবং তার সমাধান যত দ্রুত করা যায় তারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। । এলাকার যে দলীয় পার্টি অফিস দৈনন্দিন মিটিং এবং ভোটার লিস্টের যা কাজকর্ম রয়েছে সেগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর, এমএলএ দের নির্দিষ্ট ভাবে ভাগ করে দিতে বলা হয়েছে।যাতে ভোটার লিস্টে নাম তোলার কাজ নতুন ভোটারদের নাম যাতে বাদ না যায় এবং সংশোধনের কাজ দ্রুত করতে দলীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের এলাকার BLO- র সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। NRC এবং CAA রাজ্যে করতে দেবেন না তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেছেন। সেইমতো বাড়িতে বাড়িতে জনসংযোগের পাশাপাশি সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেস যে তাদের পাশে আছে সেটা বোঝানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরো জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে লবি করে টিকিট পাওয়া যাবে না। যতটা সম্ভব দামি পোশাক গয়না এড়িয়ে চলার নির্দেশও দলের নেতাদের প্রতি দেয়া হয়েছে। এদিন দলের কাউন্সিলর এবং অন্যান্য নেতাদের উদ্দেশ্যে শীর্ষ নেতারা বলেন, নিজের ও দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুন। দল সকলের দিকে নজর রাখছে। মানুষের পাশে থাকলে জনসংযোগ ঠিক থাকলে যোগ্য ব্যক্তি সবাই টিকিট পাবেন।
উন্নয়নের ব্যাপারে এবং জনসংযোগ এর ব্যাপারে কোন রং দেখবেন না।