উইঘুর মুসলিমদের জোর করে কারখানার শ্রমিক করা হচ্ছে চিনে
ইচ্ছে থাক, বা না থাক৷ কারখানায় শ্রমিক হতেই হবে৷ না হলে নেমে আসবে শাস্তির খাঁড়া৷ সম্প্রতি চিনের জিংজিয়াং প্রদেশের প্রশাসনের তরফে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ এর জন্য বিশেষ সংরক্ষণও করা হয়েছে বিশেষ কারখানায়৷
সম্প্রতি সর্বভারতীয় একটি ইংরেজি দৈনিকে এই সংবাদ প্রকাশিত করা হয়৷ সেই সংবাদ অনুযায়ী, দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে৷ চাষবাস, ব্যবসা বা অন্য স্বাধীন কাজকে স্বার্থপরতার সঙ্গে তুলনা করে সরকারি নির্দেশ না মানলে শাস্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷
চিনের জিংজিয়াং প্রদেশে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বাস৷ এরা মূলত উইঘুর ও কাজাখস সম্প্রদায়ের৷ তাঁদের উপর চিন সরকারের দমনপীড়নের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে৷ সেখানেই এই নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে বলে ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি৷
ওই সংবাদ অনুযায়ী, বাধ্য হয়ে চিনের মুসলিমরা চাষবাস ছেড়ে দিচ্ছেন৷ দোকানপাঠও বন্ধ করে দিচ্ছেন৷ বদলে হাজির হচ্ছেন সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে৷ সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে কেউ বিভিন্ন কারখানার কাপড় সেলাই করছেন, তো কেউ কাজ করছেন কোনও জুতো তৈরির কারখানায়৷ কারও কারও আবার জুটছে সাফাইয়ের কাজ৷
কাজ পাওয়ার আগের প্রশিক্ষণ পর্ব বেশ কঠিন৷ কারণ, প্রশিক্ষণ পর্ব শুধু বাধ্যতামূলক নয়৷ অনেকটা সামরিক কায়দায় শক্ত ধাপ পেরিয়ে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হচ্ছে৷ তার পরও যোগ্যতাকে একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে ধরা হচ্ছে না৷ বরং যে সংস্থায় কাজ পাচ্ছে, সেখানকার কর্তৃপক্ষের প্রতি আনুগত্যও প্রমাণ করতে হচ্ছে প্রতি পদে পদে৷
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের শুরুতে রাজনৈতিক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে৷ তার পর চিনের গান শেখানো হচ্ছে৷ তার ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে ক্লাস করানো হচ্ছে৷ শেষে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য প্রমাণের প্রশিক্ষক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের৷
চিনের জিংজিয়াং প্রদেশে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব ততটা নেই৷ সেই কারণেই সেখানকার সমস্ত মানুষদের মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
যদিও চিন সরকার দাবি করছে, উইঘুর ও কাজাখসদের মধ্যে দারিদ্রতা ও কর্মহীনতার জন্য অনেকে বিপথে যাচ্ছেন৷ ধর্মীয় মৌলবাদ বাড়ছে৷ তাই তাদের সঠিক পথে আনতে ও সামাজিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ওই এলাকার প্রত্যেক মানুষই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই বিভিন্ন কারখানায় কাজে যোগ দিচ্ছেন৷
সম্প্রতি ওই এলাকার একটি সংস্থা থেকে ওয়ালমার্ট সামগ্রী কিনেছে৷ এছাড়া বেশ কয়েটি জাপানি সংস্থা জিংজিয়াং অঞ্চল থেকে কাপড় কেনে৷