পয়লা বৈশাখ। বাঙালি এই দিনটায় একেবারে চেটেপুটে বাঙালিয়ানার স্বাদ উপভোট করে। বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উত্সব দুর্গাপুজো হলেও পয়লা বৈশাখের নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে আলপনা দিয়ে, পুজো করে এই দিনটি পালিত হয়। শহরেও পয়লা বৈশাখে সেজে ওঠে বড় বড় শপিংমলগুলো। বাংলা গান, বাংলা সাহিত্য, বাঙালির পোশাক, বাঙালির রান্নার মাধ্যমে পয়লা বৈশাখের হাত ধরে নিজস্ব সংস্কৃতির কাছে অন্তত এই এক দিনের জন্য হলেও ফিরে যায় বাঙালি সম্প্রদায়।
কিন্তু এই দিনের সঙ্গে হালখাতার যোগ রয়েছে কি ? এই নিয়ে তর্ক আর বিতর্কের অন্ত নেই। ব্যাখ্যা করে বললে, এর ইতিহাস একেবারে আদিমযুগের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষ যখন লাঙলের ব্যবহার শিখল। তখন তারা এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করল। এবং তখন চাষ করা দ্রব্যের বিনিময় প্রথা শুরু হল। এই হালের দ্রব্য বিনিময়ের হিসেবের জন্য একটি খাতায় নিজেদের মতো করে তারা লিখে রাখতে শুরু করল। সেই সময়কার ভাষায়। এবং সেই খাতারই নাম ছিল 'হালখাতা।" হাল শব্দটি সংস্কৃত এবং ফারসি, দু'টি থেকেই এসেছে বলে দাবি করা হয়। সংস্কৃত হলে তার মানে লাঙল। আর ফারসি হলে হাল-এর মানে নতুন। তাই এই দু'টি শব্দই হালখাতার ক্ষেত্রে যথাযোগ্য।
১ লা বৈশাখকে নববর্ষ বা বছরের শুরু হিসেবে ধরি এই রীতি কিন্তু শুরু হয় ৩১৯ সালে। সেই সময় থেকেই পাঁজি গণনা শুরু হয়। এর আগে বছরের গণনা শুরু হত হিম বা শরৎ কাল থেকে। ঋতু হিসেবে বছর গণনা করেতেও দেখা যায়। তবে পঞ্জিকা গণনার সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালির পয়লা বৈশাখের শুরু না হলেও উৎসব পালনের শুরু। আর হালখাতা পয়লা বৈশাখের আর এক নাম। বর্তমান কালে এই দিন দোকানে দোকানে পুজো হয়। নতুন খাতা খোলা হয়। সামান্য কিছু দিয়েও খাতা খোলার রীতি এখনও রয়েছে। বেশ কিছু বছর ধরেই পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা। নতুন বছরের শুরু।