বাইক বা কার দুর্ঘটনা কমাতে মেমারীর দিগন্তিকার নতুন আবিষ্কার চমকে দিল জগতবাসীকে
ফের চমক দিল মেমারীর ভি এম ইনস্টিটিউশন ইউনিট-২এর একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিগন্তিকা বোস। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে পরপর নতুন উদ্ভাবনের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার জয়ী দিগন্তিকা এবার তৈরী করল দুর্ঘটনারোধে গাড়ি চালককে নিয়ন্ত্রণ করার যন্ত্র। ইতিমধ্যেই পেটেণ্টের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদনও জানানো হয়েছে।
দিগন্তিকার বাবা সুদীপ্ত বোস এবং মা শুভ্রা বোস জানিয়েছেন, দিগন্তিকা এবার টেকনোলজি তথা কারিগরী বিদ্যা ও মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবন করেছে এমন এক যন্ত্র যা কোনো বাইক বা চারচাকা গাড়িতে ব্যবহার করলে চালকের গাড়ি চালানোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে তাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন আবেগজড়িত বক্তব্যের (ইমোশনাল স্পিচ) মাধ্যমে চালককে নিয়ন্ত্রণ করবে। এমনকি চালককে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিশেষ হুইসপারিং বা ফিসফিসানি শব্দের সাহায্যে চালকের শরীরে এড্রিনালিন হরমোন ক্ষরণ তরান্বিত করে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবে।
তাঁরা জানিয়েছেন, মাত্র ৫০০ টাকা খরচে তৈরী করা সম্ভব হয়েছে এই যন্ত্র। এছাড়াও এই ডিভাইসটি ব্যবহারের ফলে শুধু এক্সিডেন্ট থেকেই রক্ষা পাওয়া যাবে তাই নয়, তার সঙ্গে বায়ুদূষণও কমবে। এই ডিভাইসের পোষাকি নাম দেওয়া হয়েছে - Technology with emotion based anti collision device for vehicle ।
ইতিমধ্যে পঃ বঃ সরকার আয়োজিত রাজ্য বিজ্ঞান মেলায় আউস্টান্ডিং ৩-তে স্থান পেয়েছে দিগন্তিকার এই নয়া উদ্ভাবন। এজন্য দিগন্তিকার স্কুলকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫০,০০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ জানুয়ারি তার এই উদ্ভাবন পুনরায় প্রদর্শনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম কোলকাতায় আমন্ত্রণ পেয়েছে। তার উদ্ভাবন কেন্দ্র সরকারের মিনিষ্ট্রি ওফ কমার্স স্টাট ওফ প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সুদীপ্তবাবুরা জানিয়েছেন, দিগন্তিকার এই নয়া উদ্ভাবন, গবেষণা পত্র Indian Institute of Management Ahmedabad -এর এক সেমিনারে DST Government of India র পক্ষ থেকে পাঠের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, দিগন্তিকার 'ডাষ্ট কালেক্টিং এটাচমেন্ট ফর ড্রিল মেশিন' এই আবিষ্কারের গবেষণা পত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গত ২১ সেপ্টেম্বর।
উল্লেখ্য, এর আগে দিগন্তিকা যে সমস্ত আবিষ্কার তথা নতুন উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সেগুলি হল – ১) সুন্দরবনে জীবিকার প্রয়োজনে যাঁরা জঙ্গলে যান, তাঁদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ চশমা, যা ব্যবহারে মাথা বা ঘাড় না ঘুরিয়েই পিছন দিকও দেখা যায়। ২) ডাষ্ট কালেক্টিং এটাচমেন্ট ফর ড্রিল মেশিন। এটি যেকোন হ্যন্ড ড্রিল মেশিনের সামনে সহজে যুক্ত করে ড্রিল বা ফুটো করলে কোন ধুলো উড়বেনা। ধূলো একটি চেম্বারে জমা হবে। আর এজন্য কোন অতিরিক্ত বিদ্যুত খরচও হবেনা। ড্রিল মেশিন এর কম্পন থেকেই শক্তি গ্ৰহণ করে এই কাজ করতে সক্ষম। ৩) স্মার্ট সার্ভিক্যাল কলার - বারনৌলির সূত্র কাজে লাগিয়ে বিশেষ কারিগরি পদ্ধতিতে তৈরি কলার সার্ভিক্যাল স্পন্ডিলাইটিস রোগী পড়লে তাঁর প্রচণ্ড ঘাম বা অস্বস্তি হবে না। এবার দিগন্তিকার নতুন আবিষ্কার Technology with emotion based anti collision device for vehicle।